সৌদি আরব সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের হজ মৌসুম শেষে প্রকাশিত একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে হজ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে প্রথম স্থানে রেখেছে। ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা, প্রযুক্তি ব্যবহারে আধুনিকতা ও যাত্রীসেবার মান বিবেচনায় এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
প্রথমবারের মতো, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশ এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।
"হজ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, সময়ানুবর্তিতা, ও যাত্রী সেবায় আন্তরিকতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ" — এমন মন্তব্য এসেছে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে।
সূচক বাংলাদেশের অবস্থান
🔹 হজযাত্রী পরিবহন সময়ানুবর্তিতা ✅ ৯৮% সময়মতো
🔹 ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনা অ্যাপ ✅ সফলভাবে প্রয়োগ
🔹 খাবার, চিকিৎসা ও আবাসন মান ✅ আন্তর্জাতিক মানের
🔹 যাত্রীসেবায় স্বেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণ ✅ ১২,০০০+ স্বেচ্ছাসেবক
🔹 অভিযোগ নিষ্পত্তির হার
প্রযুক্তিনির্ভর ও সেবামুখী হজ পরিকল্পনা :
বাংলাদেশ হজ অফিস, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি এজেন্সিগুলোর সমন্বয়ে "হজ ডিজিটাল সেবা প্ল্যাটফর্ম ২০২৫" চালু করা হয়। এর মাধ্যমে:
- ই-ভিসা, ই-টিকিটিং, অনলাইন ট্র্যাকিং
- মোবাইল অ্যাপ দিয়ে হজযাত্রী লোকেশন ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ
- হজ এজেন্সি, ফ্লাইট ও আবাসন মনিটরিং
- ব্যবস্থা সহজ, স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে।
চিকিৎসা ও জরুরি সহায়তা: দ্রুততম সাড়া ব্যবস্থা
- প্রতিটি হজ ক্যাম্পে ২৪ ঘণ্টা মেডিকেল টিম
- জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস
- হজযাত্রীদের ইনস্যুরেন্স কাভারেজ
ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন: "এটা বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবজনক অর্জন। আমরা হজযাত্রীদের সম্মানের সঙ্গে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই স্বীকৃতি আমাদের ভবিষ্যৎ হজ ব্যবস্থাপনায় অনুপ্রেরণা দেবে।"
বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যবস্থাপনা, নারীদের আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পরিবেশবান্ধব যাত্রাব্যবস্থার কথা উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
সরকারি হজ অফিস, বেসরকারি হজ এজেন্সি, ও বাংলাদেশ মিশন মক্কা-মদিনা সমন্বিতভাবে কাজ করে
হজযাত্রীদের যাত্রার প্রতিটি ধাপে সহায়তা নিশ্চিত করেছে।
হজ যাত্রীদের প্রতিক্রিয়াতেও এই সেবার মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ পাওয়া গেছে।
উপসংহার: একটি সফল রূপান্তরের গল্প
সাধারণত অভিযোগ, বিলম্ব ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে আলোচিত হজ ব্যবস্থাপনা এবার পরিণত হয়েছে "উন্নয়ন, সেবা ও সম্মানজনক ব্যবস্থাপনার অনুকরণীয় মডেল" হিসেবে।
বাংলাদেশের এই অর্জন শুধু সৌদি সরকারের স্বীকৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় — এটি বিশ্বদরবারে দেশের অবস্থানকে আরও দৃঢ় ও মর্যাদাবান করেছে।