Website Logo

Sunday, July 27, 2025 06:50 AM

ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬: আয়োজক দেশ ও নতুন ফরম্যাট – এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন

ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬: আয়োজক দেশ ও নতুন ফরম্যাট – এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন
ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে চলেছে। এটি হবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজন, যা আয়োজক দেশ এবং ফরম্যাট উভয় দিক থেকেই নজিরবিহীন।

আয়োজক দেশ: উত্তর আমেরিকার তিন রাষ্ট্র

২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিনটি ভিন্ন দেশে যৌথভাবে আয়োজিত হবে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো। এর আগে কেবল ২০০২ সালে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। এই তিন দেশের ১৬টি শহরে মোট ১০৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে, যা একটি নতুন রেকর্ড।

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: মূল আয়োজক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১টি শহরে ম্যাচ হবে, যার মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেস, মিয়ামি, আটলান্টা, সিয়াটল, হিউস্টন, ফিলাডেলফিয়া, কানসাস সিটি, বোস্টন, ডালাস, সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া এবং নিউইয়র্ক মেট্রোপলিটন এলাকা (নিউইয়র্ক/নিউ জার্সি) উল্লেখযোগ্য। ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্ক/নিউ জার্সি স্টেডিয়ামে।

    মেক্সিকো: মেক্সিকো তিনটি শহর – মেক্সিকো সিটি, গুয়াদালাজারা এবং মন্টেরেতে – বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজন করবে। মেক্সিকো প্রথম দেশ হিসেবে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের স্বাগতিক হতে যাচ্ছে। মেক্সিকো সিটির ঐতিহাসিক এস্তাদিও অ্যাজটেকা উদ্বোধনী ম্যাচের আয়োজন করবে।

    কানাডা: কানাডার দুটি শহর – টরন্টো এবং ভ্যাঙ্কুভারে – প্রথমবারের মতো পুরুষদের বিশ্বকাপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

এই তিনটি দেশ স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।

নতুন ফরম্যাট: ৪৮ দলের মহাযজ্ঞ

২০২৬ বিশ্বকাপ শুধু আয়োজক দেশেই নয়, টুর্নামেন্টের ফরম্যাটেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে। এটি হবে ৪৮ দলের প্রথম বিশ্বকাপ, যা আগের ৩২ দলের ফরম্যাটের থেকে ১৬টি দল বেশি। এর ফলে ম্যাচ সংখ্যাও ৬৪ থেকে বেড়ে ১০৪-এ উন্নীত হয়েছে।

নতুন ফরম্যাটের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

    ১২টি গ্রুপ, প্রতিটি ৪টি দল: আগে যেখানে ৮টি গ্রুপে ৪টি করে দল ছিল, সেখানে এখন ১২টি গ্রুপে ৪টি করে দল থাকবে। প্রতিটি গ্রুপে দলগুলো একে অপরের সাথে একবার করে খেলবে।

    ৩২ দলের নকআউট পর্ব: প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল এবং সেরা আটটি তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দল নিয়ে ৩২ দলের একটি নকআউট পর্ব শুরু হবে। এটি বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবার যেখানে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে সরাসরি ৩২ দলের নকআউট পর্ব শুরু হবে।

    ম্যাচ সংখ্যা বৃদ্ধি: মোট ১০৪টি ম্যাচ খেলা হবে, যা দর্শকদের জন্য আরও বেশি ফুটবল দেখার সুযোগ করে দেবে।

    টুর্নামেন্টের সময়কাল: টুর্নামেন্টটি ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই ২০২৬ পর্যন্ত প্রায় ৩৯ দিন ধরে চলবে, যা আগের বিশ্বকাপগুলোর চেয়ে কিছুটা দীর্ঘ।

    ফাইনালিস্টদের জন্য ৮টি ম্যাচ: যে দলগুলো ফাইনালে পৌঁছাবে, তাদের মোট ৮টি ম্যাচ খেলতে হবে, যা আগের ফরম্যাটে ৭টি ম্যাচের থেকে একটি বেশি।

এই ফরম্যাট পরিবর্তনের ফলে আরও বেশি দেশকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য সরাসরি স্লট সংখ্যা বেড়েছে।